ঢাকা,রোববার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪

উপকূল বাঁচাতে স্থানীয় সরকারের নেতৃত্বে বাঁধের জন্য জরুরি বরাদ্দ দিন -সেমিনারে বক্তারা

বাজেট পরবর্তী অনলাইন সেমিনারে স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি ও নাগরিক সমাজ
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি:
বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা (এনজিও) কোস্ট ট্রাস্ট ও সিএসআরএল (ক্যাম্পেইন ফর সাসটেইনেবল রুরাল লাইভলিহুড) যৌথভাবে “জাতীয় বাজেট ২০২০-২১: বেড়িবাঁধ ও উপকূলের মানুষের সুরক্ষা” শীর্ষক একটি অনলাইন সেমিনার আয়োজন করে।

শনিবার (১৩ জুন) অনুষ্ঠিত অনলাইন সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন পিকেএসএফ-এর চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমেদ। সঞ্চালনা করেন কোস্ট ট্রাস্টের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরী।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী এমপি এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনার সংসদ সদস্য আখতারুজ্জামান বাবু এমপি।

বক্তব্য রাখেন- সাতক্ষীরা, খুলনা, গলাচিপা, ভোলার চরফ্যাশন ও কুতুবদিয়ার ছয়জন ইউনিয়ন চেয়ারম্যান, সিএসআরএল-এর জিয়াউল হক মুক্তা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন ড. মাহবুবা নাসরিন, সিপিআরডির মো: শামছুদ্দোহা, এওএসইডির শামীম আরেফীন প্রমুখ।

কোস্ট ট্রাস্টের আরিফ দেওয়ান মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক প্রলয়ংকরী ঘুর্ণিঝড় আমফানের ধ্বংসাত্মক প্রভাবের পরও আমরা দেখলাম এই বাজেটে উপকূলের বেড়িবাঁধের জন্য বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধি পায়নি, যা উপকূলে মানুষের প্রাণ ও তাদের ফসল রক্ষার মাধ্যমে দারিদ্র পীড়িত অঞ্চলের অর্থনীতি এগিয়ে নিতে পারত। এর ফলে উপকূলে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে।
স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি ও অন্যান্য বক্তাদের বক্তব্যের মধ্য নিয়ে নিম্নলিখিত দাবিগুলো উত্থাপিত হয়: (১) উপকূলীয় অঞ্চলের বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণে বছরে অন্তত ১২ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করতে হবে। (২) স্থানীয় সরকার সেই বেড়িবাঁধ নির্মাণের নেতৃত্ব দেবে ও বাজেট বরাদ্দ করবে, পানি উন্নয়ন বোর্ড শুধু বাঁধের নকশা, নির্মাণের মনিটরিং ও অন্যান্য কারিগরি সহায়তা দেবে। (৩) কুতুবদিয়া ও কয়রার মতো অধিকা ক্ষতিগ্রস্ত স্থানে অনতিবিলম্বে সেনাবাহিনীর মাধ্যমে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করতে হবে। (৪) বিচ্ছিন্ন চরসমূহ, যেখানে দরিদ্র মানুষের বসবাস বেশি, সেখানে ভবিষ্যতে বাঁধ নির্মাণের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিতে হবে। (৫) বাংলাদেশের উপকূলকে জলবায়ু সহনশীল করার জন্য বেড়িবাঁধকেন্দ্রিক আর্থ-সামাজিক কর্মসূচি হাতে নিতে হবে যেমন- লবণাক্ততা ব্যবস্থাপনা, যথাযথ নাব্যতা বজায় রাখা, বাঁধের উভয় পাশে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বাঁধ সংরক্ষণের পরিকল্পনা নিতে হবে।

আখতারুজ্জামান বাবু এমপি তার বক্তব্যে বলেন, সাইক্লোন আইলার পর থেকেই খুলনা ও সাতক্ষীরা অঞ্চলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের যথাযথ নকশা অবলম্বন করে বেড়িবাঁধ নির্মাণ না করায় পুরো অঞ্চল এখন অরক্ষিত। এসব জায়গায় জরুরি ভিত্তিতে বাঁধ নির্মাণ করতে হবে।

সাবের হোসেন চৌধুরী এমপি বলেন, সাইক্লোন আমফানের পূর্বে প্রস্তুতি ভালো হওয়ায় আমরা প্রাণহানী এড়াতে পেরেছি। কিন্তু এসব এলাকায় বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও তার স্থায়িত্বশীল সংরক্ষণের জন্য আমাদের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা করতে হবে। আগামী অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় এটিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। তিনি আরো বলেন, এই কাজে স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহন ও স্থানীয় সরকারকেই নেতৃত্ব নিশ্চিত করতে হবে।

রেজাউল করিম চৌধুরী তার বক্তব্যে বলেন, আমরা এক্ষেত্রে শ্রীলংকার মডেল অনুসরণ করতে পারি, বেড়িবাঁধের উভয় পাশে বনায়ন গড়ে তোলা, যাতে তা দীর্ঘস্থায়ী হয়। এটি বেড়িবাঁধের জন্য যেমন লাভজনক, তেমনি নদী অঞ্চল ও লোনা পানির মাছ চাষের জন্য লাভজনক।

ড. কাজি খলীকুজ্জমান আহমেদ সরকারকে উপকূলীয় বেড়িবাঁধ নির্মাণে অগ্রাধিকারের পরামর্শ দিয়ে বলেন, বেড়িবাঁধ নির্মাণ দুর্নিতি মুক্ত রাখতে হবে এবং এজন্য এতে স্থানীয় সরকারকে দায়িত্ব দিতে হবে।

পাঠকের মতামত: